ধন ও সৌভাগ্যের দেবী হলেন লক্ষ্মী। তাঁর আর এক নাম শ্রীদেবী। ভাগবৎ পুরাণ, বিষ্ণু পুরাণ ও ব্রহ্মা পুরাণে বলা হয়েছে, ভৃগুপত্নি খ্যাতির গর্ভে শ্রীদেবীর জন্ম। শতপথ ব্রাহ্মণে অবশ্য বলা হয়েছে, শ্রীদেবী প্রজাপতি (ব্রহ্মা) হতে উৎপন্ন হয়েছেন এবং তিনি ধন, সৌন্দর্য ও সৌভাগ্য প্রদান করেন।
আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে অর্থাৎ কোজাগরী পূর্ণিমায় দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়। বাঙালির ঘরে ঘরে মা লক্ষ্মী পূজিতা হন দেবীপক্ষের শেষের এই পূর্ণিমাতে। পশ্চিমবঙ্গে পুজো হয় মূলত মাটির প্রতিমায়। এছাড়া সরায় লক্ষ্মীর পট এঁকেও পুজো করা হয়।
লক্ষ্মীপুজোর পদ্ধতি হিসেবে শুদ্ধ আসনে বসে আচমন থেকে শুরু করে পঞ্চ দেবতার পুজো করতে হয়৷
লক্ষ্মীর ধ্যান করে বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে দেবী লক্ষ্মীর পুজো করা হয়৷
লক্ষ্মীপুজো পঞ্চ উপাচার দশ উপাচার আলাদা ১৬ উপাচারে করা হয়ে থাকে৷ পূজার মৌলিক নীতি হিসেবে লক্ষীর ধ্যান পূজা ,মন্ত্র পাঠ ,পুষ্পাঞ্জলি প্রদান ও প্রণাম মন্ত্র পাঠ করতে হয় ৷অবশেষে বিসর্জন দিতে হয় ৷
প্রত্যেক দেবদেবীর একটা নিজস্ব কিছু রীতি নীতি মন্ত্র ইত্যাদি থাকে। মা লক্ষীর পুজোতে পুজোর মন্ত্র পরে সুষ্ঠ ভাবে করতে হয় বা করা উচিত। পুজো আর্চা জেনে নিয়ে করা ভাল, না জেনে ভুল ভাবে পুজো করলে অমঙ্গল হয়।
স্নান করে শুদ্ধ হয়ে লক্ষ্মী গায়ত্রী মন্ত্র ১০৮ বার জপ করলে অত্যন্ত সন্তুষ্ট হন মা লক্ষ্মী।
প্রতিদিন দেবীর পায়ের চিহ্ন আঁকা খুব ভাল। প্রতিদিন না পারলেও বৃহস্পতিবার অথবা শুক্রবার এবং মা লক্ষ্মীর পুজোর তিথি থাকলে অবশ্যই লক্ষ্মীর পা আঁকবেন।
লক্ষ্মীর প্রতিমা বা পটের সামনে দু’টি ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালালে তা মঙ্গল। এর সঙ্গে পদ্ম, নারকেল ও ক্ষীরের নৈবেদ্য দিলে প্রসন্ন হন দেবী।
ঠাকুরঘরে বা ঠাকুরের সিংহাসনে কড়ি এবং শঙ্খ রাখা খুবই ভাল।
লক্ষ্মী পুজোয় কী কী একেবারেই করবেন না
লক্ষ্মীপূজায় লোহা বা স্টিলের বাসনকোসন ব্যবহার করবেন না।
লোহা দিয়ে অলক্ষ্মী পূজা হয়। তাই লোহা দেখলে লক্ষ্মী ত্যাগ করে যান।লক্ষ্মীপূজায় ঘণ্টা বাজাতে নেই।
লক্ষ্মীকে তুলসীপাতা দিতে নেই। কিন্তু লক্ষ্মীপূজার পর একটি ফুল ও দুটি তুলসীপাতা দিয়ে নারায়ণকে পূজা করতে হয়।
লক্ষ্মীপূজা সাধারণত সন্ধ্যাবেলা করে, তবে অনেকে সকালেও করে থাকেন। সকালে করলে সকাল ন-টার মধ্যে করে নেওয়াই ভাল।
পূজার পর ব্রতকথা পাঠ করতে হয়।