এই মুহূর্তে একটি বিয়েও ঘিরে সরগরম সোশ্যাল মিডিয়া। অঘ্রাণের শুভ মরসুমে সাতপাকে বাঁধা পড়েছেন বঙ্গকন্যা ঊষসী কর।  আর তার বিয়ে ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। ঊষসীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বিয়ের রীতিনীতি, ঐতিহ্য নিয়ে ছেলেখেলা করেছেন।

বিয়ের সাজে সেজে ঊষসী একটি ফেসবুক পোস্ট করেছিলেন। প্রোফাইল পিকচার দিয়ে তিনি লিখেছিলেন, “জ্ঞান হওয়া ইস্তক বিয়ে করার দুটো শর্ত দিয়ে রেখেছিলাম বাবা-মা কে। এক, বাবার সারাজীবনের যাবতীয় সঞ্চয় নিঃশেষ করে সোনার গয়না কেনার অশ্লীল কাজটা আমি করবনা। দুই, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান করবনা। দুটোর জন্যই বিয়ে করার সময় অসংখ্য সমালোচনা শুনেছি মুখের উপর। বন্ধু বান্ধব ও বলেছে, “ঝুটা গয়না পরে বিয়ে করবি?” বা, “চাকরি করিস, বাবা চাকরি করে.. তাও এত ছোটলোকি?” থেকে, ” বাঙালি বউ একটু সিঁদুর পরলে মুখটা কত মিষ্টি লাগে..” পর্যন্ত.. লড়াইটা একদিনের ছিলনা। দিনের পর দিন অসংখ্য মানুষকে জবাবদিহি করতে হয়েছে। বাবাও পুরোই মেনে নেয়নি, কিছু গয়না আমায় কিনতে হয়েছে, রোজ পরার মতো টুকটাক। আর বিয়ের আগেরদিন পর্যন্ত নানাজনের থেকে শুনেছি নানান বাঁকা মন্তব্য। এখনও শুনছি।কিন্তু, আমার কোনো লজ্জা নেই এটা বলতে, যে বিয়ের দিন সাজার জন্য যা গয়না আমি পরেছি, তার ৯৫% ইমিটেশন। সিঁদুর, শাঁখা পলা, যজ্ঞ ইত্যাদি কিছুই স্থান পায়নি আমার বিয়েতে। আমি পিতৃতান্ত্রিক ধর্মীয় ব্যবস্থায় বিশ্বাস করিনা, আর উল্টোদিকে বাবাকে সারাজীবনের পরিশ্রম আমার গয়না কিনে জলে দিতে হোক, তাতেও বিশ্বাস করিনা। আর, আমার নিজেরও ক্ষমতা নেই। যেটুকু ক্ষমতা ছিল, শখ মিটিয়েছি। সে গল্প আরেকদিন।”

এখানেই ঘোরতর আপত্তি নেটমহলের একাংশের। তাঁদের অভিযোগ, ঊষসী সবই করেছেন ভাইরাল হওয়ার জন্য। সোশ্যাল মিডিয়ার নজর টানতে চান তিনি। ক্ষুব্ধ নেটিজেনদের প্রশ্ন, তিনি যদি অর্থ অপচয়ই না করতে চান, তাহলে প্রিওয়েডিং ফোটোগ্রাফি, সজ্জা, লোককে নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানো-সহ ব্যয়বহুল কাজগুলি করতে গেলেন কেন? রেজিস্ট্রি ম্যারেজ করলেই তো পারতেন-এমনই মত ক্ষুব্ধদের। বিয়েতে ধর্মীয় আচার আচরণ পালন না করেও তিনি রীতিনীতি ঐতিহ্যের চরম অবমাননা করেছেন বলে বক্তব্য নেট জগতের একাংশের।

তবে ঊষসীর পাশেও আছেন বহু নেটনাগরিক। তাঁদের দাবি, তিনি যা করেছেন, একদম ঠিক করেছেন। তিনি যদি বাবার টাকায় সোনার গয়নায় সাজতে না চান, তাহলে আপত্তির কী আছে? ধর্মীয় আচার মেনে সিঁদুর না পরাতেও কোনও অপরাধ দেখছেন না তাঁরা। তাছাড়া ঊষসী তো একবারও বলেননি তিনি কাউকে নিমন্ত্রণ করবেন না। তিনি যেটা করবেন বলে ভেবেছিলেন, সেটাই করেছেন। তাঁর ইমিটেশন গয়না পরে বিয়ে করা এবং সিঁদুর-শাঁখা-পলা না পরার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের একাংশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here