
নিজের বিছানা ছাড়া ঘুম হত না তাঁর, ওজন ১০ কেজি। ঘুমোনোর সময় দরকার পড়ত এসির, বাড়িতে সেই যেন মহারাজ। নাম তাঁর টমু। আসলে সে এক পোষ্য। পোষ্যের মালিক-মালকিনই টমুর বাবা মা। একা একা কখনও বাড়ির বাইরেও যায়নি টমু। আচমকা কীভাবে যেন সে হঠাৎ উধাও হয়ে গিয়েছে। একেবারে ঘরকুনো ছেলে কোথায় গেল, সেই চিন্তায় নাওয়া খাওয়া ভুলেছেন টমুর বাবা-মা।
টমুর বাবা-মা আসলে চুঁচুড়ার দম্পতি রূপা-ঋতব্রত। ছোট থেকে একটি বেড়ালছানাকে পুত্রস্নেহে বড় করেছেন তারা। গত ১৭ জানুয়ারি বিকেলে সেই টমু হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যায়। তারপর থেকে আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না তার। টমুর সন্ধান পেতে শহরের আনাচেকানাচে ‘সন্ধান চাই’ পোস্টার দিয়েছেন ওই দম্পতি। সোশ্যাল মিডিয়াতেও পোষ্যের সন্ধান চেয়ে কাতর আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
আনন্দবাজার ডিজিটালে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী টমুর ‘মা’ রূপার কথায়, ‘‘কয়েক দিন আগে টমুর শরীর খারাপ হয়েছিল। ডাক্তার দেখানো হল। চার হাজার টাকার ইসিজি, রক্তপরীক্ষা— সব হল। ওর নির্বীজকরণের জন্য ১৬ হাজার টাকার প্যাকেজ দিয়েছিলেন ডাক্তার। কিন্তু মাঝে ওর শরীর খারাপ হওয়ায় তা আর করানো হয়নি। টমু কখনও বাড়ির বাইরে যায়নি। ও রাস্তাঘাট কিছুই চেনে না। তাই খুব দুশ্চিন্তা হচ্ছে, কী ভাবে রাস্তা চিনে বাড়ি ফিরবে ও?’’ টমুর ব্বার নাম ঋতব্রত। তিনি বলছেন, ‘‘আমার এক ছেলে। তার জন্যেও আমি কখনও ছুটি নিই না। কিন্তু টমু হারিয়ে যাওয়ায় আমার মাথা খারাপ হবার অবস্থা। বাড়িতে খাওয়াদাওয়া প্রায় বন্ধ। আমাদের আরও একটি মেয়ে বিড়াল আছে। কয়েক দিন পরেই তার বাচ্চা হবে। সে জন্য সব রকম ব্যবস্থা করা আছে। কিন্তু এমন সময়েই নিখোঁজ হয়ে গেল টমু। চিন্তায় ঘুম আসছে না। কে জানে, আমরা যেমন ওকে খুঁজছি, টমুও হয়তো তেমন তার বাড়ি খুঁজছে!’’