বৃহস্পতিবারের সকাল নিয়ে এসেছে রাজ্যবাসীর জন্য একরাশ অশ্রু। এদিন সকাল ৮টা ২০ মিনিটে প্রয়াত হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে পাম এভিনিউর ছোট্ট এক কামরার ফ্ল্যাটে নেমেছে মানুষের ঢল। পৌঁছেছেন বাংলার বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্ষীয়ান বাম নেতার মৃত্যুতে শোকাহত মমতা বৃহস্পতিবার রাজ্যে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছেন। শেষযাত্রায় সব রকম সহযোগিতারও কথাও বলেছেন তিনি।
বুদ্ধবাবুর প্রয়ান প্রসঙ্গে মমতা বলেন, “আজ সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছি। আগামিকাল রাষ্ট্রীয় সম্মানের সঙ্গে আমরা তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে চাই। তিনি দীর্ঘ দিন বিধানসভার জনপ্রতিনিধি ছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, একাধিক দফতরের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর মৃত্যু রাজ্যের পক্ষে বড় ক্ষতি।”
তাঁর আরও সংযোজন, “বুদ্ধদেব যত বার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছিলেন, এটা আমাদের কাছে বড় প্রাপ্তি ছিল। তাঁর মৃত্যুর বয়স হয়তো এখনও হয়নি। কিন্তু শারীরিক সমস্যা ছিল, শ্বাসকষ্ট হত। আমি তাঁর পরিবারের সকলকে, সিপিএম তথা বামফ্রন্টের প্রত্যেককে এবং আমাদের প্রত্যেক সহনাগরিককে সমবেদনা জানাচ্ছি।”
মমতার পর রাজ্যের দুই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও ফিরহাদ হাকিমও পৌঁছে যান প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে।দুপুরে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও যান তাঁর বাড়িতে।
পাম অ্যাভিনিউয়েই অপর একটি ফ্ল্যাটে থাকেন প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। তিনিও অত্যন্ত শোকাহত। বর্ষীয়ান বাম নেতার প্রয়াণের খবর পেয়েই তাঁর ফ্ল্যাটে যান সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সুজন চক্রবর্তী, সূর্যকান্ত মিশ্র, তরুণ নেতা সৃজন ভট্টাচার্য, প্রয়াত বাম নেতা শ্যামল চক্রবর্তীর মেয়ে ওভিনেত্রী ঊষসী চক্রবর্তী সহ একাধিক ব্যক্তিত্ব।
বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত নিজস্ব ফ্ল্যাটেই রাখা হবে তাঁর দেহ। রাতে রাখা হবে পিস ওয়ার্ল্ডে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের দেহ শায়িত থাকবে আলিমুদ্দিনে সিপিএমের রাজ্য দফতরে। সেখানেই সাধারণ মানুষ প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন। বিকেলে অন্তিম যাত্রার পর তাঁর দেহ দান করা হবে এনআরএস হাসপাতালে। ইতিমধ্যে প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রীর চক্ষুদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।