বাংলাদেশ থেকে ভারতকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে সেদেশের সেনাবাহিনী চাইলে চার দিনের মধ্যে কলকাতা দখল করতে পারে। বাংলাদেশের প্রাক্তন এই সেনাকর্তার দাবি ঘিরে বিরাট হইচই শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভারতের সহায়তাতেই ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছিল, সেই ভারতকেই নাকি সেনাশক্তির হুঁশিয়ারি দিচ্ছে বাংলাদেশ! অথচ প্রতিবেশী এই দুই দেশের সামরিক শক্তির মধ্যে রয়েছে আকাশ-পাতাল তফাৎ।
২০২৪ সালে গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছ, তাতে বিশ্বের চতুর্থ শক্তিধর সামরিক বাহিনী হল ভারত। পাওয়ার ইনডেক্স (০.০০০-র অর্থ হল নিখুঁত) হল ০.১০২৩। শীর্ষ স্থানাধিকারী আমেরিকার পাওয়ার ইনডেক্স হল ০.০৬৯৯। দ্বিতীয় স্থানাধিকারী রাশিয়া এবং তৃতীয় স্থানাধিকারী চিনের পাওয়ার ইনডেক্স হল যথাক্রমে ০.০৭০২ এবং ০.০৭০৬। সেখানে বাংলাদেশ আছে ৩৭ নম্বরে। পাওয়ার ইনডেক্স হল ০.৫৪১৯।
আকাশপথ
ভারত: গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের কাছে মোট ২,২৯৬টি এয়ারক্রাফট আছে। যুদ্ধবিমানের সংখ্যা হল ৬০৬টি। আছে ৮৬৯টি হেলিকপ্টারও। এয়ারক্রাফট, যুদ্ধবিমান এবং হেলিকপ্টারের সংখ্যার নিরিখে বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ স্থানে আছে ভারত।
এখন ভারতের হাতে রাফাল, তেজস, সুখোই এসইউ-৩০এমকেআই, মিরাজ ২০০০-র মতো যুদ্ধবিমান আছে। ২০১৯ সালে ভারত বালাকোটে যে এয়ারস্ট্রাইক চালিয়েছিল, তাতে মিরাজ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা হয়েছিল। তখন রাফাল ছিল না ভারতের হাতে। এখন ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান আছে। আসছে আরও রাফাল।
বাংলাদেশ: বাংলাদেশের কাছে মোট ২১৬টি এয়ারক্রাফট আছে। যুদ্ধবিমান আছে ৪৪টি। ৭৩টি হেলিকপ্টার আছে। মোট এয়ারক্রাফটের নিরিখে বিশ্বে ৪৬ নম্বর, যুদ্ধবিমানের নিরিখে বিশ্বে ৩৯ নম্বর এবং হেলিকপ্টারের নিরিখে ৪৯ নম্বর স্থানে আছে বাংলাদেশ।
স্থলপথ
ভারত: গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের হাতে ৪,৬১৪টি ট্যাঙ্ক আছে। রকেট আর্টিলারির সংখ্যা ৭০২। ১,৫১,২৪৮টি গাড়ি আছে। সেলফ-প্রপেলড আর্টিলারির সংখ্যা হল ১৪০। ভারতের হাতে আছে টি-৯০ ভীষ্ম, জোরাবরের মতো ট্যাঙ্ক। সেইসঙ্গে ভারতের কাছে প্রচুর দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র আছে। সর্বোপরি ভারত পরমাণু শক্তিধর দেশ।
বাংলাদেশ: অস্ত্রভাণ্ডারের নিরিখে ভারতের থেকে ধারেভারে অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের রিপোর্ট অনুযায়ী, ৩২০টি ট্যাঙ্ক আছে বাংলাদেশের হাতে। গাড়ির সংখ্যা হল ১৩,১০০। ২৭টি সেলফ-প্রপেলড আর্টিলারি আছে। রকেট আর্টিলারির সংখ্যা হল ৭১।
জলপথ
ভারত: গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের রিপোর্ট অনুযায়ী, নৌপথে ভারতের হাতে থাকা মোট ‘অ্যাসেট’-র সংখ্যা হল ২৯৪। আছে ১২টি ফ্রিগেট এবং ১২টি ডেস্ট্রয়ার। সাবমেরিনের সংখ্যা হল ১৮। প্যাট্রোলিং ভেসেল ১৩৭টি আছে। এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার আছে দুটি।
ভারতের এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার দুটির নাম হল আইএনএস বিক্রমাদিত্য এবং আইএনএস বিক্রান্ত। যে দুটি জাহাজ থেকে যুদ্ধবিমান ওঠানামা করতে পারবে। সেইসঙ্গে ভারতের হাতে একাধিক পরমাণু শক্তিধর সাবমেরিন আছে। দিনকয়েক আগেই সেরকম একটি সাবমেরিন থেকে ৩,৫০০ কিলোমিটার পাল্লা-বিশিষ্ট মিসাইলের পরীক্ষা চালিয়েছে ভারত।
বাংলাদেশ: গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের রিপোর্ট অনুযায়ী, মোট ১১৭টি ‘অ্যাসেট’ আছে। সাবমেরিনের সংখ্যা হল দুটি। ফ্রিগেটের সংখ্যা সাতটি। ৫৫টি প্যাট্রলিং ভেসেল আছে।