ফেসবুক প্রোফাইলের ছবি দেখে প্রেমের প্রস্তাব ফেরাতে পারেনি মালদহের কিশোরী। শুধু তা-ই নয়, সেই যুবকের সঙ্গে দেখা করার এতই উদগ্র বাসনা ছিল যে, বাড়িতে কাউকে কিছু না জানিয়েই চলে এসেছিল পড়শি জেলায়। প্রেমিকার ফোন পাওয়া মাত্র প্রেমিকও পৌঁছে যান লম্বা ঝুলের আকাশি রঙের পাঞ্জাবি আর সাদা পাজামা পরে। কিন্তু সেই প্রেমিক সামনে আসতেই চক্ষুচড়কগাছ কিশোরীর। মাথায় হাত দিয়ে রাস্তায় বসে পড়ে সে। ‘এ কী করে ফেললাম! এ যে বয়স্ক লোক! শেষে বয়স্ক লোকের প্রেমে পড়লাম?’— বিড়বিড় করতে করতে শেষে মূর্ছাও গেল কিশোরী।
নদিয়ার করিমপুরের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়। স্থানীয়েরাই কিশোরীকে উদ্ধার করেন। খবর দেওয়া হয় তার পরিবারকে। পুলিশকেও বিষয়টি জানানো হয়। পুলিশ এসে কিশোরীর বক্তব্য শুনে সেই বৃদ্ধকে খুঁজে বার করে। প্রাথমিক ভাবে তাঁকে আটক করা হয়। যদিও ছেড়ে দেওয়া হয় পরে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মালদলের রতুয়ার বাসিন্দা ওই কিশোরী যখন নবম শ্রেণিতে পড়ত, সেই সময় তার সঙ্গে নদিয়ার হুগলবেড়িয়ার থানা এলাকার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব সেই বৃদ্ধের পরিচয় হয় ফেসবুকে। কিশোরীর দাবি, বৃদ্ধ নিজের বয়স ভাঁড়িয়েছিলেন। নিজের বয়স ২১ বছর জানিয়ে বন্ধুত্বও করেছিলেন। দু’বছর ধরে এ ভাবে চলার পরেই প্রেম প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। কিশোরীও জানায়, তত দিনে তারও ভাল লেগে গিয়েছিল। সে-ও প্রেমে পড়ে। এর পরেই প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে নদিয়ার গোপালপুর ঘাট পৌঁছয় সে। প্রেমিককেও ফোন করে ডাকে। প্রেমিকার ফোন পেয়ে দ্রুত সেখানে পৌঁছে যান প্রেমিকও। একেবারে সেজেগুজে, পাজামা-পাঞ্জাবি পরে। কিশোরী পুলিশকে জানিয়েছে, প্রথমে ওই ব্যক্তিকে দেখে প্রেমিকের বয়োজ্যেষ্ঠ কোনও আত্মীয় বলেই মনে হয়েছিল। কিন্তু কাছে এসে তিনি নিজের পরিচয় দিতেই সে জ্ঞান হারিয়েছিল বলেই জানিয়েছে সেই কিশোরী।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনার পরেই গা-ঢাকা দিয়েছিলেন সেই বৃদ্ধ। পরে তাঁকে খুঁজে বার করে আটক করা হয়। তেহট্টের এসডিপিও শুভতোষ সরকার বলেন, ‘‘ঘটনার কথা জানতে পেরে পুলিশ পৌঁছয়। তরণীর পক্ষ থেকে কোনও লিখিত অভিযোগ না থাকায় গ্রেফতার করা হয়নি বৃদ্ধকে। তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’’ পুলিশ জানিয়েছে, কিশোরীকেও মালদহের বাড়িতে নিয়ে গিয়েছে তার পরিবারের লোকেরা।