বাঙালি খাবার খেতে কার্পণ্য করে না, আবার হজমের ওষুধ খেতেও ভুলে যায় না। ডুবো তেলে ভাজা চপ বা কষিয়ে রাঁধা মাছ অথবা মাংস খেয়েই মুখে অ্যান্টাসিড পুরে দেওয়ার অভ্যাস কমবেশি সকলেরই আছে। না খেলেই হয়তো হজমের গোলমাল, পেটের সমস্যা। নিজের খাদ্যাভ্যাস একটু পরিবর্তন করলেই কিন্তু এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

পুষ্টিবিদদের কথায়, ১০টা বা ১১টার পরে রাতের খাবার খাওয়ার পরে শুতে গেলে হজমের গন্ডগোল তো শুরু হবেই, অনিদ্রাজনিত সমস্যাও দেখা দেবে। বেশি রাতে লুচি-পরোটা খেয়ে ফেললেন অথবা বাইরে থেকে খাবার আনিয়ে খেলেন, তাতে পেটের সমস্যা আরও বাড়বে। তাই রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে রাতের খাওয়া সারতে হবে এবং অবশ্যই খুব হালকা খাবার খেতে হবে।

যে কোনও খাবার পুরোপুরি হজম করতে মানুষের শরীর কমপক্ষে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় নেয়। তাই ৪ ঘণ্টার বেশি ব্যবধানে খাবার খেতে হবে। এর চেয়ে কম ব্যবধানে খেলে অম্বল অনিবার্য। পেট ফাঁপার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

প্রাতরাশে সাধারণত দুধ, ফল, দানাশস্য জাতীয় খাবার তো থাকেই। তাই এগুলি বাদ দিলে ক্যালশিয়াম, ভিটামিন সি, ফাইবার, অন্যান্য ভিটামিন ও খনিজ উপাদানের মতো গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি বাদ পড়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। যাঁরা প্রাতরাশ খান না, তাদের খাদ্যতালিকায় পুষ্টিকর খাবার কম থাকে। সুতরাং শরীরে পুষ্টিগুণও কম পরিমাণে পৌঁছয়। এঁরা খাদ্যতালিকায় কার্বোহাইড্রেট, সুগার ও ফ্যাট বেশি পরিমাণে রাখেন এবং প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরিযুক্ত খাবার খান, ফলে পেটের গোলমাল লেগেই থাকে।

শরীরকে যথেষ্ট ফাইবার দিতে হবে। ফাইবার কম খেলেই ওজন বাড়বে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তো কমবেই, অন্ত্রে উপকারি ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যাও কমবে। ফলে হজমের সমস্যা দেখা দেবে, কোষ্ঠকাঠিন্য ভোগাবে এবং সবসময়েই ক্লান্ত, অবসন্ন লাগবে।

দুপুরে হোক বা রাতে, খাওয়া সেরেই ঘুমিয়ে পড়লে বদহজম তো হবেই। খাওয়া ও ঘুমানোর মধ্যে অন্তত ৩ ঘণ্টার ব্যবধান থাকা উচিত। খেয়েই শুয়ে পড়লে বদহজম, বুকজ্বালা, অম্বল, ওজন বৃদ্ধি এমনকি স্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে। প্রয়োজনে হাঁটাহাঁটি করুন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here