পুরানের অধিকাংশ জায়গাতেই সরস্বতীকে ব্রহ্মানী অর্থাৎ ব্রহ্মার স্ত্রী বলে মানা হয়। কোথাও কোথাও আবার দেবী শ্রীবিষ্ণুরও স্ত্রী। আসল গল্প কী, আজ জেনে নিই চলুন।

শ্রীবিষ্ণুর সরস্বতী ছাড়াও আরও দুই স্ত্রী ছিলেন, গঙ্গা ও লক্ষ্মী। এদিকে তিন স্ত্রীর মধ্যে বিষ্ণু সবচেয়ে বেশি ভালবাসতেন গঙ্গাকে। স্বামীর ভালবাসা থেকে বঞ্চিত হওয়াকে মেনে নিয়েছিলেন শ্রীলক্ষ্মী। তিনি কিছুই বলতেন না। সরস্বতী কিন্তু তা মানলেন না। তিনি মুখ খুললেন। গঙ্গার প্রতি স্বামীর অতিরিক্ত প্রেম দেখে ক্ষেপে গেলেন দেবী। একদিন তাই রুদ্রমূর্তি ধারণ করলেন। স্বামীর ওপর যত না রাগ, তার থেকে বেশি রাগ গিয়ে পড়ল সতীনের ওপর। গঙ্গার সঙ্গে সরাসরি কলহপর্বে নামার প্রস্তুতি নিলেন সরস্বতী। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলেন লক্ষ্মী।

তিনি দু’জনকেই বোঝানোর চেষ্টা করলেন। কিন্তু এতে তো কাজ হলই না, বরং সরস্বতী আরও বেশি রেগে গেলেন। তাই এবার তাঁর কোপ এসে পড়ল নম্র স্বভাবের লক্ষ্মীর ওপর। সরস্বতী লক্ষ্মীকে অভিশাপ দিয়ে বললেন দেবী তুলসী গাছে পরিণত হবেন। এদিকে শুধুমাত্র অশান্তি যাতে না হয় তার জন্য সরস্বতীকে বোঝাতে গিয়েছিলেন লক্ষ্মী। তাই বিনা কারণে তাঁকে অভিসম্পাত করা মোটেই মেনে নিতে পারলেন না তিনি। তাই তিনিও সরস্বতীকে অভিশাপ দিলেন যে বাগদেবী নদীতে পরিণত হবেন। এতই যখন হল তখন আর গঙ্গাই বা বাদ যান কেন। এদিকে লক্ষ্মীর থেকে অভিশপ্ত হয়ে রেগে গিয়ে সরস্বতী অভিশাপ দিলেন গঙ্গাকে। বললেন গঙ্গাও মর্তে গিয়ে নদী রূপে প্রবাহিত হবেন।

তিন বউয়ের এই ঝগড়া বিবাদের মাঝে এসে হাজির হলেন শ্রীবিষ্ণু। তিনি দেখলেন কলহপ্রিয়া সরস্বতী ও গঙ্গাকে নিয়ে ঘর করা দায়। তাই তিনি দুই স্ত্রীকে ত্যাগ করলেন এবং মনস্থির করলেন এবার থেকে শান্ত, নম্র লক্ষ্মীর সঙ্গে সংসারে মনোনিবেশ করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here