হিন্দুশাস্ত্রে ৫১ শক্তিপীঠের অন্যতম হল কালীঘাট মন্দির। মহাদেব যখন দেবী সতীর মৃত শরীরকে নিয়ে তাণ্ডব নৃত্য শুরু করেন, তখন পৃথিবী ধংসের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য ভগবান বিষ্ণু তার সুদর্শন চক্র দিয়ে দেবী সতীর দেহকে খন্ড বিখন্ড করে দিয়ে ছিলেন। দেহাংশগুলি যেখানে গিয়ে পরে সেগুলি একেকটি শক্তি পিঠে পরিণত হয়। এই রকমই একটি শক্তি পিঠ হলো কালীঘাট মন্দির। যেখানে দেবীর ডান পায়ের আঙ্গুল পড়েছিল বলে লোকমুখে কথিত রয়েছে।
জানা যায়, ১৮০৬-০৯ সালে বড়িশার জমিদার সাবর্ণ চৌধুরীদের কেউ এই মন্দিরটি নির্মান করেন। কথিত আছে, ব্রহ্মানন্দ গিরি ও আত্মারাম ব্রহ্মচারী নামে দুই সন্ন্যাসী কষ্টিপাথরের একটি শিলাখণ্ডে দেবীর রূপদান করেন। বাংলার অন্যতম প্রাচীন শক্তিপীঠ কালীঘাটের প্রতিষ্ঠা ঠিক কবে হয়েছিল তা বলা খুবই কঠিন! তবে মনে করা হয় এই মন্দিরটি প্রায় ২০০ বছরের পুরনো। বলা হয়, এই মন্দিরের দশনার্থীরা কেউই খালি হাতে ফেরত যায় না। মা কালী সবারই মনস্কামনা পূর্ণ করেন। কলকাতা মহানগরীর একটি অন্যতম দর্শনীয় স্থানএই কালীঘাটের মন্দির। বলা হয়,
কলকাতার কালীমূর্তিটি কষ্টিপাথরের। মাতৃমূর্তির জিভ, দাঁত ও মুকুট সোনার। হাত ও মুণ্ডমালাটি যথাক্রমে সোনা ও রূপা দিয়ে তৈরি। মন্দিরে স্থাপিত বিগ্রহের নিম্নভাগ দেখা যায় না। বলা হয়, মন্দিরে মধ্যে একটি সিন্দুকে সতীর প্রস্তরীভূত অঙ্গটি রক্ষিত আছে। প্রতি বছর স্নান যাত্রার দিন মন্দিরের রুদ্ধদ্বার কক্ষে চোখ বাঁধা অবস্থায় মূর্তিটিকে স্নান করানো হয়।
বিশ্বাস করা হয় যে কালীঘাটের কালীমন্দিরেই বাংলায় সর্বাধিক তন্ত্র সাধনা করা হয়। একসময় কালীঘাটের পাশ দিয়ে বয়ে যেত বুড়িগঙ্গা। পারলে অবশ্যই ঘুরে আসুন কালীঘাট মন্দির থেকে।