শীত আসছে, এই সময়ে বেরিয়ে আদতে পারেন তামিলনাড়ু। ভারতের দক্ষিণপ্রান্তের শেষ বিন্দুতে পৌঁছতে চাইলে, বেছে নিতে হবে এই রাজ্য। জেনে নিন এ রাজ্যের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রগুলি কী কী?

কন্যাকুমারী: এই শীতে তামিলনাড়ু গেলে অবশ্যই ঘুরে দেখুন কন্যাকুমারী। ভারতের মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণতম বিন্দুতে রয়েছে কন্যাকুমারী জেলা। শীতেও এখানে পাখা ঘোরে। রোদের তেজও কম নয়। তবু অন্য মরসুমের চেয়ে শীতকাল এখানে ঘোরাঘুরির জন্য আদর্শ।

এখানে বিস্তীর্ণ সমুদ্র সৈকত আছেই, রয়েছে বহু প্রাচীন কন্যাকুমারী মায়ের মন্দির, তবে এর অন্যতম আকর্ষণ বিবেকানন্দ রক মেমোরিয়াল। তামিলনাড়ুর মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে দু’টি পাথর রয়েছে। কিংবদন্তি অনুযায়ী, তারই একটি শিলায় দেবী কন্যাকুমারী (পার্বতী) শিবের জন্য তপস্যা করেছিলেন। আর ইতিহাস বলে, ১৮৯২ সালে স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর আমেরিকা সফরের আগে শিলাটির উপরে বসে টানা তিন দিন ধ্যান করেছিলেন।

রামেশ্বরম: তামিলনাড়ুর আর এক ধর্মীয় স্থান রামেশ্বরম। তবে কেউ যান ধর্মের টানে, কেউ যান প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগে। ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে পম্বন চ্যানেলের দ্বারা বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপ। পম্বন দ্বীপটিই রামেশ্বরম নামে পরিচিত। সৌন্দর্যের বিচারে এর অন্যতম আকর্ষণ পম্বন সেতু। প্রবল জলরাশির উপর দিয়েই গিয়েছে রেলসেতু। সারা দিনে হাতে গোনা ট্রেন চলে তার উপর দিয়ে। সড়ক পথে আসার জন্য রয়েছে পম্বন সেতু। রামেশ্বরমের খুব কাছেই শ্রীলঙ্কার মান্নার দ্বীপ। কথিত, পম্বন দ্বীপের প্রান্তে অবস্থিত ধনুষ্কোডি থেকেই রামায়ণে রামচন্দ্র লঙ্কায় যাওয়ার জন্য সেতুবন্ধ করেছিলেন।

শহরের মধ্যভাগে রয়েছে রামনাথস্বামী মন্দির। নির্মাণশৈলীতে দক্ষিণীধাঁচের শিল্প, ভাস্কর্য ফুটে উঠেছে।

কুন্নুর: দক্ষিণী রাজ্যটিতে যদি পাহাড়, চা-বাগান, মেঘ-কুয়াশার আলিঙ্গন দেখতে চান, তবে বেছে নিতে পারেন কুন্নুর।চা-বাগানের মনোমুগ্ধকর পরিবেশ আর নীলগিরি পাহাড়ে ট্রেক করার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা, সবটাই উপভোগ করতে পারবেন এই শহরে। কুন্নুরে গিয়ে ঘুরে নিতে পারবেন, ডলফিন নোজ ভিউ পয়েন্ট, সিমস পার্ক, ল্যাম্ব রক, দ্রুগস ফোর্ট, ওয়েলিংটন গল্ফ কোর্স, লস ফলস ঘুরে দেখতেই পারেন। চারদিকে সবুজ আর ঠান্ডা পরিবেশে দিন দুয়েক কাটিয়ে চলে যেতে পারেন উটি। তবে তগাড়িতে নয়, কুন্নুর থেকে উটি যাওয়ার জন্য বেছে নিন টয়ট্রেন। নীলগিরি মাউন্টেন রেলওয়ের অন্তর্গত ‘হেরটিজ’ টয় ট্রেনটি শুধু দেশ নয়, বিদেশি পর্যটকদের কাছেও জনপ্রিয়। কোয়েম্বত্তুরের মেট্টুপালাইয়ম স্টেশন থেকে তামিলনাড়ুপর আর একটি পর্যটন কেন্দ্র উটি পর্যন্ত যায় ট্রেনটি। কুন্নুর স্টেশন থেকে টিকিট কাটতে পারেন। পাহাড়ি পথে টয়ট্রেনের যাত্রা বাদ পড়লে অসম্পূর্ণ থেকে যাবে কুন্নুর এবং উটি ভ্রমণ। উটিতে রয়েছে হ্রদ, রোজ় গার্ডেন, বোটানিক্যাল গার্ডেন, পাইকারা লেক।

কী ভাবে যাবেন?

কলকাতা থেকে বিমানে মাদুরাই বা কোয়েম্বত্তুর গিয়ে সেখান থেকে সড়কপথে কন্যাকুমারী যেতে পারেন। কোয়েম্বত্তুর থেকে দূরত্ব ৪৪০ কিলোমিটার। হাওড়া শালিমার স্টেশন থেকে কন্যাকুমারী যাওয়ার ট্রেন রয়েছে। সময় লাগে আড়াই দিন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here