বহু সাহিত্যিকের লেখনীতেই হোটেলে ভূত থাকার গল্প উঠে আসে। এগুলো যে শুধুই গল্প তা তো নয়। আসলে বাস্ত ব অভিজ্ঞতা থেকেই তো ভূতের গল্পের সৃষ্টি হয়। হয়তো সেই গল্প কিছুটা অতিরঞ্জিত। তবুও বিচার বিবেচনা করে দেখলে দেখা যাবে সে গল্পের সব গরুই গাছে ওঠে না।
পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এমন কিছু হোটেল রয়েছে য্বেখানে ঘটে অলৌকিক কাণ্ড কারখানা। প্রায়ই সেগুলিতে শোনা যায় ভৌতিক গল্প। এই যেমন ব্যানফ স্প্রিং হোটেল। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হোটেলগুলির মধ্যে প্রথমেই থাকবে। কানাডার অ্যালবার্টা রাজ্যের ব্যানফ ন্যাশনাল পার্কে অবস্থিত ব্যানফ স্প্রিং হোটেলের বিলাস ব্যাসন নিয়ে কেউ কোনও প্রশ্ন তুলতে পারবে না। এই স্থাপত্যও দেখার মতো। ১৮৮৭ থেকে ১৮৮৮ সালের মধ্যে এটিও নির্মাণ করেছিলেন বিখ্যাত আমেরিকান আর্কিটেক্ট ব্রুস প্রিন্স।
এই হোটেলে যারা থেকেছেন তাঁরা অধিকাংশই কিছু না কিছু অতি প্রাকৃত ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন। রাত হলেই সাদা বিয়ের গাউন পরা এক মহিলাকে হোটেলের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। এই মহিলা কে তা নিয়ে বিস্তর চর্চার পর জানা গিয়েছিল এই হোটেলেই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল এক তরুণীর। বিয়ের রাতে সাদা গাউনে আচমকা আগুন লেগে যায় তাঁর। আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে তড়িঘড়ি সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়েই ঘটে যায় বিপত্তি। সিঁড়ি থেকে পড়ে যান তিনি, তারপর মাথায় আঘাত পান। আঘাত এতটাই গুরুতর ছিল বাঁচানো সম্ভব হয়নি তরুণীকে। শোনা যায়, ওই তরুণীর বিদেহী আত্মাই আজও ঘুরে বেড়ায় হোটেলের আনাচে-কানাচেই।
আরও এক গল্প আছে। এই হোটেলের এক অভিশপ্ত রুম ৮৭৩। এই রুমে যারা থেকে তাঁরা কখনও দেখেছেন একা একাই সরে যাচ্ছে আসবাবপত্র, পাওয়া যাচ্ছে শিশুর কান্নার আওয়াজ। আবার কখনও স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া আওয়াজ। প্রথম দিকে অতিথিদের ওই ঘর দেওয়া হলেও পরবর্তীতে এত অভিযোগ আসত যে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে দেওয়াল তুলে কক্ষে ঢোকার পথ আটকে দেয়। তবে সেসব আজও হয়ে চলেছে।
এর নেপথ্যেও রয়েছে এক মর্মান্তিক কাহিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে হোটেলটির ৮৭৩ নম্বর রুমে এক পরিবার ছিল। তারা ওই রুমেই খুন হয়। কে বা কারা কেন পরিবারটিকে খুন করেছিল তা কোনওদিনই জানা যায়নি। কানাডার অ্যালবার্টা রাজ্যের ব্যানফ ন্যাশনাল পার্কে অবস্থিত ব্যানফ স্প্রিং হোটেলের জনপ্রিয়তায় বিন্দুমাত্রও ভাটা পড়েনি।