দক্ষিণ কোরিয়ার সর্বাধিক ভৌতিক ও রহস্যময় ৩টি জায়গার মধ্যে একটি গনজিয়াম সাইকিয়াট্রিক হাসপাতাল। এই ভয়ঙ্কর সুবৃহৎ ভবনটি মানুষের কাছে আতঙ্কের কারণ। স্থানীয় লোককথায় শোনা যায় এই হাসপাতালের মালিক পাগল হয়ে গিয়েছিলেন। তার দুঃসহ ব্যবহার অগণিত রোগীর মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠেছিল। গনজিয়াম সাইক্রিয়াটিক হাসপাতালকে ঘিরে রয়েছে অসংখ্য গল্প।
গনজিয়াম সাইকিয়াট্রিক হাসপাতাল দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়াংজু-সি-তে অবস্থিত। গুয়াংজু-সি সিওলের একটি ছোট শহর। এই হাসপাতাল ভবনে প্রতি বছর কৌতুহলী মানুষ আসেন আসল রহস্য উন্মোচনে।
সিএনএন এই ভবনটিকে বিশ্বের অন্যতম সেরা ভূতুড়ে স্থান বলে দাবি করেছেন। হাসপাতালের দরজা যখন তখন আপনা আপনি বন্ধ হয়ে৩ যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও নানারকম ব্যাপার স্যাপার ঘটতে থাকে। স্থানীয় কিংবদন্তি, হাসপাতালে রোগীরা রহস্যজনকভাবে মারা গিয়েছিলেন। কারও কারও দাবি ছিল যে, এখানকার চিকিৎসকরাও মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন।
গনজিয়াম সাইকিয়াট্রিক হাসপাতাল ১৯৯৫ সাল থেকে বন্ধ। নয়ের দশকের শেষ কয়েক বছরে এই হাসপাতালে রোগী এবং কর্মচারীদের আকস্মিক মৃত্যু ঘটেছিল। বলা হয় তাদের মৃতদেহ হাসপাতালের মেঝেতেই লুকিয়ে রাখা হয়েছে। রোগীদের পরিবারের অনেক সদস্যরও মৃত্যু হয়েছে। যদিও একদম গবেষকদের মত, কোনও এক সংক্রমণের কারণেই হয়েছে এই মৃত্যুমিছিল। ধীরে ধীরে হাসপাতালকে ঘিরে নানাবিধ মুখরোচক গল্প গড়ে ওঠে। কেউ কেউ পরিত্যক্ত হাসপাতালের অন্ধকার মেঝেতে অনেক অস্বাভাবিক কার্যকলাপ অনুভব করছেন বলে দাবি।
মাঝে মাঝেই স্থানীয়রা হাসপাতাল থেকে আর্তনাদ শুনতে পান। বিল্ডিং থেকে কারা যেন বেরিয়ে যাআন, জানালায় দরজায় আঁচড়ের বিভৎস শব্দ আসে, জানালায় দেখা যায় রক্তের দাগ। অনেকের =ই ধারণা মৃত রোগীরা আজও যন্ত্রণায় আর্তনাদ করে চলেছেন।
ভবনটিতে অনেকগুলি তলা রয়েছে। একতলা থেকে সব কটি তলায় ডুবে থাকে অন্ধকারে। ১৯৯২ সালের ৯ ডিসেম্বর হাসপাতালটি পুনরায় চালু হয়। আবার বন্ধ করে দেওয়া হয় ১৯৯৫ সালে। ১৯৯৬ সালে, সরকারি কর্মকর্তারা মামলাটি তদন্ত করতে আসেন। তারপর কোনও এক অজ্ঞাত কারণে দক্ষিণ কোরিয়া ছেড়ে আমেরিকায় পালিয়ে যান তিনি।
অনেক গবেষক গনজিয়াম সাইকিয়াট্রিক হাসপাতাল নিয়ে গবেষণা করেছেন। রহস্যজনক কিছুই তাঁরা খুঁজে পাননি। যারা কৌতূহলী হয়ে মননের খিদে মেটাতে ভবনে রাত্রিবাস করেছেন তারা ভূতের অস্তিত্ব না বুঝলেও অলৌকিক ঘটনা প্রত্যক্ষ্য করেছেন। ২০১৮ সালের ২৮ মার্চ একজন কোরিয়ান পরিচালক জুং বুম-শিক হাসপাতালের উপর ভিত্তি করে “গনজিয়াম: হন্টেড” নামে এ৩কটি সিনেমা বানান।