ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের প্রতিপদ থেকে শুরু হয়ে পরবর্তী অমাবস্যা র্যন্ত সময় হল পিতৃপক্ষ। পিতৃপক্ষ শেষ হয় মহালয়ায়। এবর ২ অক্টোবর পালিত হচ্ছে মহালয়া পুরাণমতে, ব্রহ্মার নির্দেশে পিতৃপুরুষরা এই কদিন মনুষ্যলোকের নিকটে আসেন।১৫ দিন ধরে এই স্মরণ-তর্পণ করার জন্যই স্বর্গ থেকে মর্ত্যে পাঠানো হয়েছিল কর্ণকে।

কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে মারা যাওয়ার পর কর্ণ স্বর্গে গেলেন। তাঁকে সেখানে খাদ্য-পানীয়ের বদলে খেতে দেওয়া হল সোনা-রুপো-ধন-রত্ন বিস্মিত কর্ণ প্রশ্ন করলেন, এ কী? খাদ্যের বদলে তাঁকে এসব কেন দেওয়া হচ্ছে? তখন তাঁকে জানানো হয়, মহাবীর কর্ণ আজীবন শুধু এইসবই দানধ্যান করেছেন, কখনও নিজের পূর্বপুরুষের কথা স্মরণ করেননিতাঁদের আত্মার প্রতি খাদ্যপানীয় নিবেদন করেননি। তাই দানের পুণ্যফলে তিনি স্বর্গে আসতে পারলেও খাদ্যপানীয় পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হননি।

কর্ণ জানান, এতে তাঁর কোনও দোষ নেই, তাঁর জন্ম-মুহূর্তেই মা তাঁকে ত্যাগ করেছেন। অধিরথ ও তাঁর স্ত্রী রাধা তাঁকে প্রতিপালন করেন। দুযোর্ধন তাঁকে আশ্রয় দেন। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ শুরুর আগের দিন প্রথমে কৃষ্ণ ও পরে কুন্তী এসে তাঁর জন্ম ও বংশ পরিচয় জানান। এরপরই যুদ্ধ আরম্ভ হয় এবং তারপর মাত্র ষোলো-সতেরো দিন তিনি বেঁচে ছিলেন। পিতৃপুরুষকে জল দেবার সময় পেলেন কখন?

তখন কর্ণকে জানানো হয়, তাঁকে আবার মর্ত্যে ফিরতে হবে। সেখানে গিয়ে পিতৃপুরুষকে জলদান করতে হবে। তাহলেই স্বর্গে এসে তিনি খাদ্যপানীয় পাবেন। তখন যমের বা ইন্দ্রের নির্দেশে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপ্রতিপদ তিথিতে কর্ণ আবার মর্ত্যে আসেন। সেখানে ১৫ দিন থেকে পিতৃপুরুষকে জল দান করেন তিনি। আশ্বিনের অমাবস্যা তিথিতে শেষ জলদান করে স্বর্গে ফিরে যান কর্ণ। আর এই বিশেষ পক্ষকালকেই শাস্ত্রে পিতৃপক্ষবলা হয়েছেপিতৃপক্ষের শেষ দিন হল মহালয়া

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here