গরমকালে ব্রণ, ফুস্কুড়ি, র্যাশের জ্বালা কমাতেও মুখে বরফ বুলিয়ে নেন অনেকে। ত্বকের প্রদাহ কমিয়ে রক্ত সঞ্চালন ভাল করতে বরফের জুড়ি মেলা ভার। র্যাশ-ব্রণের নিরাময়ে এবং ত্বকের ক্ষত সারিয়ে নতুন কোলাজেন উৎপাদন করতে এই টোটকা দারুণ কাজের। সে জন্যই ‘আইস ফেশিয়াল’ এখন বেশ জনপ্রিয় তারকাদের মধ্যে। অনেকে আবার চটজলদি ত্বকে জেল্লা ফেরাতে বরফজলে মুখ ডুবিয়ে রাখেন। এখন কথা হল, মুখে ঘন ঘন বরফ ঘষা বা বরফ দিয়ে রূপচর্চা কতটা উপকারী? এর খারাপ দিক কি রয়েছে?
‘আইস ফেশিয়াল’ খুব তাড়াতাড়ি মুখের কালচে ভাব দূর করে ত্বক উজ্জ্বল ও জেল্লাদার করে তুলতে পারে ঠিকই, কিন্তু নিয়ম না মেনে মুখে বরফ ঘষলে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে। এই বিষয়ে ত্বক চিকিৎসক শ্রাবণী ঘোষ জ়োহার মত, বরফ দিলে সহজেই চোখের ফোলা ভাব কমে। মুখের ফোলা ভাবও কিছুটা কমে যায়। চোখে-মুখে ক্লান্তির ছাপ দূর হয়। ব্রণ বা ফুস্কুড়ি হলে ত্বকে যে ক্ষতের দাগ থেকে যায়, তা-ও নিরাময় হয়। কিন্তু বরফ লাগাতে হবে নিয়ম মেনে। সুতির কাপড় বা তোয়ালেতে বরফের টুকরো নিয়ে আলতো করে গোটা মুখে বুলিয়ে নিতে হবে। এক জায়গায় বেশি ক্ষণ ধরে রাখলেই সেখানকার ত্বকে পোড়া দাগ হয়ে যেতে পারে।
চিকিৎসক জানাচ্ছেন, বরফ বেশি ব্যবহার করলে ‘আইস বার্ন’ হতে পারে। ত্বকের যে অংশ বরফের সংস্পর্শে বেশি আসবে, সেখানকার কোষগুলির ক্ষতি হতে পারে। ত্বকের কোষ জমে শক্ত হয়ে যেতে পারে, ফলে সেখানে স্বাভাবিক রক্ত চলাচল ব্যাহত হবে। অক্সিজেনের অভাব দেখা দেবে। কোষ নষ্ট হয়ে ক্ষতের দাগ তৈরি হবে। কালচে পোড়ার মতো দাগও হতে পারে।
বরফ দিয়ে ফেশিয়াল করলে খুব অল্প সময়ের জন্যই ত্বকে বরফ লাগানো উচিৎ। কিন্তু যদি বরফ জল মুখে ঢালেন, অথবা বরফ জলে মুখ ডুবিয়ে বসে থাকেন, তা হলে ত্বক খুব তাড়াতাড়ি শুষ্ক হবে, চামড়া কুঁচকে গিয়ে বলিরেখা পড়তে শুরু করবে মুখে। লালচে র্যাশও দেখা দিতে পারে। তাই মুখে বরফ ঘষলে, তার পরেই ময়শ্চারাইজ়ার লাগিয়ে নিতে হবে। যদি দেখা যায়, বরফ লাগালেই ত্বক ফুলে উঠছে বা লালচে দাগ পড়ে যাচ্ছে, তা হলে বরফ না ব্যবহার করাই ভাল। বিকল্প হিসেবে অ্যালো ভেরা জেল ব্যবহার করা যেতে পারে। অ্যালো ভেরাও ত্বকের প্রদাহ কমাতে পারে। ত্বক তরতাজা ও মসৃণ রাখে।