
নিজস্ব প্রতিবেদন, কলকাতা, ২০ সেপ্টেম্বর: বিশ্ব ক্রিকেটের প্রবাদপ্রতিম প্রশাসক জগমোহন ডালমিয়ার প্রয়াণ দিবস ছিল ২০ সেপ্টেম্বর। আজ থেকে দশ বছর আগে আকস্মিক প্রয়াত হন ভারতীয় ক্রিকেটের ‘পিতামহ’। প্রশাসক হিসেবে নিজেকে অন্য স্তরে নিয়ে গিয়েছিলেন জগমোহন ডালমিয়া।
২২ গজে না নেমেও স্রেফ দূরদৃষ্টিতা, পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নে দৃঢ়তার উপর ভিত্তি করে শুধু ভারতীয় ক্রিকেটকেই নয়, বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা আইসিসি’কেও সাধারণ থেকে শীর্ষে নিয়ে যাওয়ার কারিগর ছিলেন জগমোহন ডালমিয়া। বিশ্বস্তরে ভারতীয় ক্রিকেটের যে প্রতিপত্তি এবং আইসিসি’র ফুলে ফেঁপে ওঠার অন্যতম রূপকার বাংলার এই কৃতি সন্তান।
বিশ্ব ক্রিকেটের ‘ভীষ্ম’-র প্রয়াণ দিবসে তাঁর সম্পূর্ণ মূর্তি উন্মোচন করেন তাঁরই শ্রেষ্ঠ শিষ্য বিশ্বরূপ দে। সিএবির প্রাক্তন যুগ্ম সচিব মুক্তকণ্ঠে একাধিকবার জানিয়েছেন, ক্রীড়া প্রশাসনে তাঁর গুরু সিনিয়র ডালমিয়া এবং গুরুকে সম্মান জানানোর ক্ষেত্রে কখনও পিছিয়ে থাকেননি বিশ্বরূপ। আজও দ্য রিফিউজ-এ নিজের গুরুকে সম্মান জ্ঞাপন করেন সিএবির প্রাক্তন কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে। প্রায় পুরো সিএবি উপস্থিত ছিল এ দিনের অনুষ্ঠানে। কিন্তু সবের মধ্যেও বারবার চোখ টানছিল একটি বিষয় এবং সেটি ডালিমিয়া পরিবারের কোনও সদস্যের উপস্থিত না থাকা। এই বিষয়ে জগমোহন ডালমিয়ার পুত্র তথা প্রাক্তন সিএবি সভাপতি অভিষেক ডালমিয়ার’কে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
প্রতি বছর জগমোহন ডালমিয়ার জন্মদিন এবং প্রয়াণ দিবস পালন করেন বিশ্বরূপ। প্রতিবার তিনি আমন্ত্রণ জানান অভিষেক’কেও। বাবার শ্রেষ্ঠ শিষ্যের ডাকে উপস্থিত থাকেন অভিষেক। কিন্তু এই বছর তিনি আমন্ত্রণ-ই পেলেন না! যেই বিশ্বরূপ দে’র সৌজন্য, অতিথিপরায়ন ভাব, আতিথেয়তা- ময়দানে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে, যিনি ক্রীড়া প্রশাসনের আদর্শ চরিত্র সেই তিনিই কিনা ভুলে গেলেন গুরুর এক মাত্র পুত্র’কে আমন্ত্রণ জানাতে! এটি বিশ্বাস করা কঠিন, ভুলে গেলেন নাকি ময়দানি সমীকরণে ভুলে যেতে বাধ্য হলেন তা নিয়ে ইতিমধ্যেই কানাঘুষো শুরু হয়েছে বটতলার আনাচে-কানাচে। যদিও অভিষেককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে কিনা সেই বিষয়ে বিশ্বরূপ দে ‘র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “হোডিং-এর জন্য যে পোস্টার বানানো হয়েছিল সেই পোস্টার সকলকেই পাঠানো হয়েছে।”
সিনিয়র ডালিমিয়া প্রয়াণ দিবস পালিত হয় সিএবি’তেও। কিন্তু এখানেও সেই একই চিত্র। সিএবির কর্তাব্যক্তি এবং কর্মীরা উপস্থিত থাকলেও দেখা নেই ডালমিয়া পরিবারের কোনও সদস্যের। মানবসভ্যতার সামাজিক রীতি বলে কোনও ব্যক্তির জন্ম দিবস কিংবা প্রয়াণ দিবস পালন করা হলে তাঁর পরিবারের সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানোটাই সাধারণত কর্তব্য।