শ্রীরামচন্দ্র আর সীতার আড়ালে কোথায় যেন হারিয়ে যান রামের তিন ভাই লক্ষ্মণ-ভরত-শত্রুঘ্নের জীবন। তেমনই মানুষ সেভাবে জানতে পারে না তাঁদের স্ত্রীদের সম্পর্কে। অযোধ্যার রাজা জনকের সবচেয়ে ছোট ছেলে ছিলেন শত্রুঘ্ন। তাঁর স্ত্রী ছিলেন শ্রুতকীর্তি। তিনি ছিলেন এক মহীয়সী নারী।
পুরাণ মতে, শ্রুতকীর্তি ছিলেন রাজা জনকের ভাই কুশধ্বজের কন্যা এবং জনকের কন্যা সীতা ও উর্মিলার মতোই বিনয়ী, পবিত্র ও ধর্মপরায়ণ। শ্রুতকীর্তির বিয়ে হয়েছিল রামের ছোট ভাই শত্রুঘ্নের সঙ্গে। পুরাণে তাঁকে দেবী লক্ষ্মীর শক্তির চক্রের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। রঘুকুলের কনিষ্ঠ সদস্য শত্রুঘ্নের সঙ্গিনী হিসেবে শ্রুতকীর্তি নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্যের আদর্শে ছিলেন এক উজ্জ্বল প্রতিমূর্তি।
যখন দেবী সীতা পৃথিবী থেকে বিদায় নেন, তখন শ্রুতকীর্তিও তাঁর আধ্যাত্মিক জীবনের পূর্ণতা লাভের জন্য একই পথ অনুসরণ করেন। রামায়ণের কাহিনিতে শ্রুতকীর্তির এই আত্মত্যাগ তাকে শুধু রঘুকুলের সদস্য হিসেবেই নয়, বরং আধ্যাত্মিকতার প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত করে। তিনি রঘুকুলে একজন আদর্শ নারী হিসেবে চিরকালীন স্মৃতির পাতায় স্থান করে নিয়েছেন, যিনি নিজের আত্মত্যাগ, বিনয় ও সহমর্মিতার মাধ্যমে নারীত্বের গৌরবময় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।